বাদাম একটি স্বাস্থ্যকর,মুখরোচক এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। বাদাম হল উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের একটি বিস্ময়কর উৎস। এটি খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ হওয়ায় একে পৃথিবীর অন্যতম উত্তম প্রাকৃতিক পুষ্টির উৎসও বলা হয়। বিভিন্ন ধরনের বাদাম রয়েছে যেমন চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদামসহ সব ধরনের বাদামে অনেক ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের জন্য উপকারী এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। বাদাম হলো সুস্বাস্থ্যের এবং ত্বকের বন্ধু।
১.ত্বকের যত্নে কাঠবাদাম: রোদে পুড়ে অনেকের ত্বকেই পিগমেন্টেশন এর সমস্যা দেখা দেয় এবং বলিরেখা দেখা দেয়। কাঠবাদামে থাকা ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ নষ্ট হওয়া রোধ করে। তাই প্রতিনিয়ত বাদাম খেলে ত্বকে পিগমেন্টেশন,ছোপ ছোপ কালো দাগ এবং বলিরেখা দূর হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
২.বাদাম শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
৩.কাঠ বাদাম ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ও এনার্জি বুস্ট করতে অনেক বেশি কার্যকর ।
৪.বাদামে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে যা শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করে । বাদাম স্মৃতিভংশের সমস্যা দূর করে স্মৃতিশক্তি আরও প্রখর করে তোলে।
৫.বাদামে থাকা উপাদান শরীরে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে ফলে ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি কমে যায়
৬.বাদাম শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
৭.বাদাম মানসিক চাপ কমিয়ে দেহ এবং মনকে সতেজ,প্রাণবন্ত ও উৎফুল্ল রাখে
৮. মস্তিষ্ক ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটাতে বাদাম অনেক বেশি কার্যকরী। বাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,ভিটামিন বি, বি৩ উপাদান মস্তিষ্ক সচল রাখতে সাহায্য করে। হাড়ের বৃদ্ধি ঘটায় ।
৯.বাদামে থাকা ফলিক এসিড ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
১০.বাদামে এক ধরনের আঁশ থাকে যা হজম শক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
ভিটামিন এবং মিনারেলে ভরপুর বাদামের উপকারিতা গুরুত্বপূর্ণ। দাগহীন মসৃণ ত্বক এবং ঘন কালো চুল সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ করে দেয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে ধুলাবালি,দূষণ,অনিয়মিত জীবনযাপন,হরমোনাল সমস্যা ও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেমন- ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ,ব্রণ,মেসতা চোখের নিচে কালো দাগ। তাই ত্বক এবং চুলের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা ভালো। এক্ষেত্রে আস্ত বাদাম এবং বাদামের তেল দুটোই বেশ কার্যকরী। বাদাম খেলে ভেতর থেকে পুষ্টি পায় এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং চুল ঘন কালো মসৃণ হয়।
আসুন জেনে নেই ত্বকের এবং চুলের যত্নে বাদাম কতটা উপকারী-
১. বাদামের তেল ত্বকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
২.এটি ত্বকে সিরাম হিসেবেও কাজ করে যা ত্বকের গভীরে গিয়ে নষ্ট কোষকে রিপেয়ার করে ।
৩.ত্বকের রোদেপোড়া দাগ, লালচে-ভাব ও জ্বালাপোড়া দূর করে ত্বককে প্রশান্তি দেয় ও সতেজ রাখে। এটি ত্বকে সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে।
৪. চোখের চারপাশের কালো দাগ দূর করতে প্রতিদিন ঘুমানোর আগে বাদামের তেল চোখের চারপাশে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এতে কালো দাগ ও কুঁচকানো ভাব ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।
৫.মেথি এবং বাদামের তেলের মিশ্রণ ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে সতেজ প্রাণবন্ত করে তোলে।
৬.ত্বকের বলিরেখা দূর করতে বাদামের তেল মধু ও লেবুর রসের মিশ্রণ ব্যবহার করুন
৭.চুল পরা বন্ধ করে চুলকে ঘন কালো করতে বাদামের তেল কার্যকরী। এটি দুমুখো চুল হওয়া বন্ধ করে ও ভঙ্গুর চুল দ্রুত ঠিক করে
৮.বাদামের তেল মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
৯.নারকেল তেল,বাদামের তেল ও মেথির মিশ্রণ ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত হয়।
১০.দূষণ,ধুলাবালি,চুলের কালার,কেমিক্যালের কারণে মাথার ত্বকে ইনফেকশন হয়ে থাকে বাদামের তেল ব্যবহারে এই ইনফেকশন দূর হয় এবং মাথার ত্বককে সুস্থ রাখে
১১. বাদামের তেল মাথায় ম্যাসাজ এর ফলে লোমকূপ খুলে যায়,ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায় চুলকে মসৃণ,নরম এবং সিল্কি করে। এছাড়াও এটি খুশকি দূর করে।