প্রাচীনকাল থেকেই ঘি পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। খাঁটি গরুর দুধ থেকে তৈরি করা হয় ঘি। ঘি ইংরেজিতে ক্লারিফাইড বাটার(Clarified Butter) নামে পরিচিত। নিরামিষ হোক বা আমিষ যেকোন রান্নার স্বাদ বাড়িয়ে তুলতে ঘি এর জুড়ি নেই। এটি স্বাদে এবং গন্ধে যেমন অনন্য তেমনি এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক বেশি। ঘি আয়ুর্বেদেও ব্যবহৃত হয় এছাড়াও এটি ত্বকের যত্নে ও চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
খাঁটি গাওয়া ঘি এর উপকারিতাঃ
অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে একটি হচ্ছে খাঁটি গাওয়া ঘি। বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিনে ভরপুর এই ঘি শরীরের নানাবিধ সমস্যার সমাধান করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখে।
১. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও শরীরে শক্তি বাড়াতে ঘি এর ব্যবহারঃ স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন সুস্থ রাখে তেমনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ঘি চর্বি যুক্ত হওয়ায় এতে কার্যকরি ফ্যাট এবং প্রোটিন বিদ্যমান যা শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শক্তি বাড়ায়।
২. রাগ কন্ট্রোল ও পজিটিভিটি বাড়াতে ঘি এর ব্যবহারঃ খাঁটি গাওয়া ঘি স্বাদে মিষ্টি এবং শীতল প্রকৃতির। এটি পজিটিভ ফুড হিসেবেও পরিচিত। ঘি এর সুগন্ধ রাগ কমাতে সাহায্য করে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
৩. হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করেঃ ঘিয়ে প্রচুর পরিমাণে বাইটারিক এসিড থাকে যা ইন্টেস্টাইনর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।ফলে হজম শক্তিও বৃদ্ধি পায়। খালি পেটে খেলেও এটি হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।
৪. ঘি খাওয়ার ফলে শরীরের ইমিউনিটি বেড়ে যায় এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. এটি শরীরে আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখে এবং শরীরকে ভেতর থেকে হাইড্রেট রাখে।
৬. ঘি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
৭. ঘি ভিটামিন এ থাকে যা চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
৮. এতে লিনলয়েক এসিড থাকে যা হৃদরোগ,ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ঘি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলে এটি শরীরের ক্ষতিকর রেডিক্যাল ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয় এবং কোষের বিন্যাস ঘটায় এতে ক্যান্সার এর কোষ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৯. ঘি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
১০. এটি শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টরল বাড়ায়। ঘি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে খাঁটি গাওয়া ঘি এর ব্যবহারঃ
১. খাঁটি গাওয়া ঘি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠে।
২. বিভিন্ন কারণে ঠোঁট কালচে হয়ে যায় ঠোঁটের এই কালচেভাব দূর করতে এক ফোঁটা ঘি রাতে লাগিয়ে রেখে সকালে পরিষ্কার করে ফেলুন। এতে ঠোঁটের ফাটাও কমে যায়। ঠোঁট নরম ও কোমল হয়।
৩. ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বককে মসৃণ,উজ্জ্বল ও টানটান রাখতে ঘি অনেক বেশি কার্যকর। ঘি এ কিছু উপাদান থাকে যা অ্যান্টি-এজিং এর কাজ করে এবং ত্বককে জোয়ান রাখে।
৪. এটি ব্রণ দূর করতেও সাহায্য করে। বেসন,দুধ এবং ঘিয়ের মিশ্রণ ১০-১৫মিনিট রেখে পরিষ্কার করে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে ২-৩দিন ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
৫. চোখের নিচে কালো দাগ কমবেশি অনেকেরই হয়ে থাকে। এই কালো দাগ সহজেই দূর করতে প্রতিদিন রাতে এক ফোঁটা ঘি চোখের নিচে দিয়ে রাখুন এবং সকালে পরিষ্কার করে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চোখের নিচের
কালো দাগ দ্রুত চলে যাবে।
৬. ঘি এবং নারকেল তেল গোসলের আগে ত্বকে ব্যবহার করে কিছুক্ষণ পর গোসল করলে ত্বক মসৃণ ও নরম হয়।
৭. ঘি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ও ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে।
৮. এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,ভিটামিন ও ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা হজমে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।
চুলের যত্নে ঘি এর ব্যবহারঃ
১. ঘি এবং অলিভ অয়েল এর মিশ্রণ চুলে কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে।এটি ব্যবহার করে কিছুক্ষণ পর পরিষ্কার করে ফেলুন।
২. এটি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে ফলে চুল ভাঙ্গা রোধ করে এবং দুমুখো চুল হওয়া বন্ধ করে।
৩. ঘি স্কাল্পকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
৪. মাথার ত্বকে ঘি মাসাজ করলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় যা চুলের বৃদ্ধি তে সহায়তা করে। চুল মসৃণ,নরম ও উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
৫. চুল পাকা রোধে ঘি বেশ কার্যকর এটি চুল পাকা রোধ করে চুলকে ঘন কালো করে।
খাঁটি গাওয়া ঘি পেতে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করুন। এছাড়াও Product সম্পর্কে জানতে পেজ এ ভিসিট করুন।